গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়
আপনি কি একজন বুদ্ধিদীপ্ত সন্তান চান? নিশ্চয়ই প্রত্যেক বাবা-মা একজন
বুদ্ধিদীপ্ত সন্তান আশা করে থাকেন। নিশ্চয়ই একজন সাধারন বাচ্চা থেকে একটি
বুদ্ধিদীপ্ত সন্তান অনেকাংশে অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকে। সেটা হোক
শ্রেণিকক্ষে,খেলার মাঠে, বা অন্য কোথাও।
চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক,গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয় আশা করছি
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হবেন।
পেজ সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়
- গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়
- গর্ভাবস্থায় কোন খাবার গুলো আবশ্যক
- গর্ভাবস্থায় যে খাবারগুলো একদম খাবেন না
- গর্ভাবস্থায় খাবারের তালিকা
- গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়
- গর্ভাবস্থায় কিছু ব্যায়াম
- শেষ কথা / ব্যক্তিগত মতামত
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়
বলাবাহুল্য, একটি সন্তানের বুদ্ধিমত্তা কেমন হবে সেটা গর্ভাবস্থায় মায়ের খাদ্য রুটিনের ওপর নির্ভর করে থাকে। গর্ভাবস্থায় মায়ের খাদ্য তালিকার ফলে একটি শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশে প্রভাব ফেলে। গর্ভাবস্থায় যদি মা সঠিক খাদ্য তালিকা মেনে চলে তাহলে সেটার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বাচ্চার উপর। অন্যথায়, বিপরীত হতে পারে।
তাই, গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয় সেটা জানার জন্যগর্ভাবস্থায় আপনি এমন কিছু খাবার খেতে পারেন, যা আপনার শিশু শারীরিক ও
মানসিক বিকাশে সাহায্য করবে। পাশাপাশি আপনার শিশুর আইকিউ বুদ্ধি ঘটাতে সক্ষম।
বিশেষজ্ঞদের মতে একটি সন্তান যখন জন্মগ্রহণ করে তার মস্তিষ্কের মাপ একটি
পূর্ণবয়স্ক মানুষের ২৫% হয়ে থাকে। ও দু'বছর বয়স পর্যন্ত সেটা বেড়ে হয়ে যায় ৭৫%
যা একটি স্বাভাবিক মস্তিষ্কে রূপ নেয়। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক,
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়-
মাছ: মাছের মধ্যে মূলত ফ্যাট যুক্ত বা তো মাছগুলো যেমনঃ টুনা, সলমন, মেকারেল
ইত্যাদি ওমেগা -৩ ফ্যটি এসিড যুক্ত। এগুলো গর্ভাবস্থায় একটি বাচ্চার মানসিক
বিকাশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই প্রতিদিনের খাদ্য
তালিকায় এ মাছগুলো সপ্তাহে অন্তত দুইদিন রাখা উচিত।
ডিম: ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, প্রটিন ও কোলিন। যা শিশুর ব্রেন এর গঠন
ও স্মৃতিশক্তি উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ডিমের মধ্যে থাকা প্রোটিন ও লোহা
কিছু জন্মের সময় ওজন বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই গর্ভাবস্থায়
প্রত্যেক মায়ের উচিত প্রতিদিন অন্তত দুইটি ডিম খাওয়া।
গর্ভাবস্থায় যে খাবার গুলো আবশ্যক
আয়রন ও ফলিক এসিড: কলা, শুকনো ফল, পুদিনা পাতা সবুজ শাক-সবজিতে আয়রন ও ফলিক
এসিড প্রচুর পরিমাণে বিদ্যমান থাকে। যা কিনা গর্ভাবস্থায় একটি শিশুর মস্তিষ্ক ও
বুদ্ধিমত্তা উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ফলিক
এসিডের গুরুত্ব অপরিসীম।
ভিটামিন যুক্ত খাবার: ভিটামিন যুক্ত খাবার যেমন, গরুর মাংস, পনির,কলিজা এই জাতীয়
খাবারের অনেক পরিমাণে ভিটামিন ডি রয়েছে। আর এ ভিটামিন ডি গর্ভাবস্থায়
শিশুর জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। কেননা গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে ভিটামিন
বি এর অভাব হলে শিশুর মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশ হয় না। তাই গর্ভাবস্থায় একজন
মায়ের উচিত পরিমাণ মতো ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার সেবন করা, পাশাপাশি সূর্যের আলোতে
কিছু সময় বসে থাকা। কেননা সূর্যের আলোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন
ডি।
আয়োডিন যুক্ত খাবার: আয়োডিনযুক্ত খাবার গর্ভাবস্থায় একটি অপরিসীম ভূমিকা পালন
করে থাকে। গর্ভাবস্থায় যদি একজন মায়ের আয়োডিনযুক্ত খাবারের অভাব হয় তাহলে
সন্তান হাবাগোবা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই পরিমাণ মতো উচিত আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার
খাওয়া। যেমন, সামুদ্রিক মাছ, ডিম,গলদা চিংড়ি, কলিজা, ভুট্টা
ইত্যাদি খেতে পারেন। উপরোক্ত খাবারগুলো নিয়মিত খেলে গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়, সেটা নিয়ে কোন সংশয় থাকবে না আশা করি
গর্ভাবস্থায় যে খাবার গুলো একদম খাবেন না
- মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার। এতে প্রচুর পরিমাণে ব্যাকটেরিয়া বসবাস করে।
- অর্ধ সিদ্ধ বা কাঁচা মাছ মাংস খাবার।
- রান্না না করা অংকই তো বীজ যেমন সিমের বিচি, খাদ্যশস্য, কাঁচামুলা ইত্যাদি এড়িয়ে চলা। কারণ এগুলোতে লিসটেরিয়া, স্যালমনিলা ও ই.কোলির মতো ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া রয়েছে।
- কাঁচা বা কম সিদ্ধ ডিম না খাওয়া।
- যকৃত বা অন্যান্য অঙ্গের মাছ। এতে যদিও প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে তারপরেও গর্ভধারিণী নারীদের জন্য এটি নিষিদ্ধ। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন 'এ'।
গর্ভাবস্থায় খাবারের তালিকা
গর্ভাবস্থায় খাবারের তালিকা নিম্নরুপ:
সকালের নাস্তা | দুপুরের খাবার | বিকেলের নাস্তা | রাতের খাবার |
---|---|---|---|
ভাত অথবা আটার রুটি | ভাত | দুধ | ভাত |
সবজি ভাজি | ঘন ডাল | দুধের তৈরি পায়েস | ঘন ডাল |
ঘন ডাল | শাক-সবজি | ফিরনি | শাক-সবজি |
ডিম ভাজি | মাছ/মাংস/ডিম | পিঠা | মাছ/মাংস/ডিম |
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়
প্রত্যেক বাবা-মাই চায় তার সন্তানদের গায়ের রং ফর্সা হোক। কারণ, আমরা সবাই
বরাবরই সুন্দরীদের পূজারী। যদিও বাচ্চার গায়ের রং কেমন হবে তা আহামরি পরিবর্তন
করা যায় না। কেননা একটি সন্তানের গায়ের রং কেমন হবে সেটা নির্ভর করে তার
বাবা-মায়ের ডি এন এর ওপর।
তারপরেও এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলা খেলে তক উজ্জ্বল বা ফর্সা হয়ে থাকে।যেমন :
অ্যাভোকাডো, এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম যা শরীরের ত্বক উজ্জ্বল করে
থাকে। আরো রয়েছে গাজর, গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও পুষ্টি যা ত্বক
উজ্জ্বল ও ফর্সা করে। সাথে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। আরও
রয়েছে, ডালিম যা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে গায়ের রং উজ্জ্বল ও
ফর্সা করে থাকে।
এগুলোই মূলত গায়ের রং উজ্জ্বল করতে সহায়ক। সাধারণত তার বংশপরম্পরায় যেভাবে চলে
আসছে এবং বাবা-মায়ের থেকে যে জিন পেয়েছে সেটার ভিত্তিতেই বাচ্চাদের গায়ের রং
নির্ধারণ হয় এবং সেটা ২০ বছর বয়স পর্যন্ত পূর্ণতা লাভ করতে থাকে।
গর্ভাবস্থায় কিছু ব্যায়াম
কোন ধরনের ব্যায়াম করবেন :
অ্যারোবিক শরীরচর্চাকে অনেকে ‘কার্ডিও’ বলে থাকে। মূলত এই ধরনের ব্যায়ামে আপনার
হাত পা এর পেশীগুলো নির্দিষ্ট ছন্দে নাড়াচড়া করতে পারে। ফলে আমাদের হৃদ স্পন্দন
বৃদ্ধি পায়। এ ধরনের ব্যায়ামের মধ্যে রয়েছে, দ্রুত হাঁটা, সাঁতার কাটা,
সাইকেল চালানো ইত্যাদি।
তাই আপনি যদি চান গর্ভাবস্থায় আপনার চর্চা করতে এবং সুস্থ থাকতে তাহলে, এই
ব্যায়ামগুলো আপনি বাসায় বসে চেষ্টা করতে পারেন। যাতে করে আপনি গর্ভাবস্থায়
সুস্থ থাকতে পারবেন।
কতক্ষণ ব্যায়াম করবেন :
উপরিক্ত সকল ব্যায়াম সম্পর্কে আলোচনা করা হলো কিন্তু, এ সকল ব্যায়াম আপনি কোন
সময় করবেন বা কতক্ষণ ধরে করবেন: মূলত আপনি সকালে উঠে এবং রাতে শুতে যাবার পর,
গর্ভবতী নারীদের জন্য সপ্তাহে ২.৫ ঘন্টা ব্যায়াম করা আদর্শ বলা হয়ে থাকে।
শেষ কথা / মতামত
আমরা উপরিক্ত সব আলোচনা থেকে জানতে পারলাম যে,গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা
বুদ্ধিমান হয়।,সাথে জানলাম গর্ভাবস্থায় কিছু ব্যায়ামের উপকারিতা পাশাপাশি
গর্ভাবস্থায় কোন খাবার গুলো খাওয়া যাবে কোন খাবারগুলো খাওয়া যাবে না। নিশ্চয়ই
আমাদের নিয়ম মেনে সব কাজ করা উচিত, এবং প্রত্যেকটা কাজ করার আগে সে সম্পর্কে
সার্চ করা দরকার। তাই আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য উপকৃত হবে বলে আমি আশা
করছি।
আমাদের আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার মন্তব্য তুলে ধরবেন, এবং আপনার
প্রিয়জনদের নিকট শেয়ার করবেন।
অর্কিড আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url